বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ (Cat Flu )

    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ


    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ নিয়ে আজকে আমরা এই কনটেন্টে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবো। বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পরে এসে লালা তে কি কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে এবং অন্য বিড়ালের এই  লালাতে ধরনের ক্ষতি হতে পারে কিনা এবং মানুষের  কি কি ধরনের ক্ষতি হতে পারে এই নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আমরা এই কনটেন্টে তুলে ধরেছি তাহলে চলুন দেখে নেয়া যাক বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য।


    বিড়ালের বিভিন্ন ধরনের রোগের মধ্যে অন্যতম হলো Cat Flu এটি বিড়ালের অতি পরিচিত একটি রোগ। সব বয়সেই বিড়ালের ক্ষেত্রে মুখ দিয়ে লালা পড়তে পারে এই রোগের কারণে। এমনকি বিড়ালের বাচ্চা অথবা গর্ভবতী বিড়াল আক্রান্ত হতে পারে। তবে এটি মূলত কি কারনে হয়ে থাকে এবং এটা থেকে বাঁচার উপায় কি এটা নিয়ে আমরা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে।

    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ

    বিড়ালের মুখে অথবা ঠোঁটে, নাকে, নাকের ডগায়, গলায়, দাঁতের মাড়িতে Cat Flu এর কারণে বিড়ালের ঘা হয় আর এটি মূলত বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার কারণ। এবং এটি বিড়ালের জন্য সবথেকে ক্ষতিকর একটি বিষয় যেটার কারনে অন্যান্য বিড়ালদের মধ্যেও Cat Flu খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। এবং আপনাদের জেনে রাখা উচিত যে এটি মানুষের মধ্যে জল হিসাবে সংক্রমিত হয় না। Cat Flu বাচ্চা বিড়ালের জন্য মারাত্মক ভাবে এটি ক্ষতি করে থাকে। Cat Flu মূলত FHV-1 এবং FCV এই দুটি ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে।


    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার আরো কিছু কারণ

    • বিড়ালের মুখে দাঁতের সমস্যা
    • বিষক্রিয়া কোন পদার্থ খেয়ে ফেললে
    • পরজীবী সংক্রমণ হইলে
    • মানসিক সাত্তা উত্তেজনার কারণে
    • গলা বা পাকস্থলীতে সমস্যা দেখা দিলে
    • পাকস্থলীতে ইনফেকশন বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলে
    • ভাইরাস বা ভেক্টরের জনিত সমস্যার কারণে

    আশেপাশের কোন অসুস্থ বিড়াল থাকলে তাদের সঙ্গে মিশছে কিনা এবং আপনার অন্য কোন বিড়াল অসুস্থ হয়েছে কিনা এই বিষয়গুলো ফলো করে দেখুন যদি এরকম কোন বিড়ালের সঙ্গে মিশে থাকে তাহলে দ্রুত সে বিড়ালটিকে আলাদা করে ফেলুন তা না হলে আপনার বাড়িতে যত বিড়াল থাকবে সবগুলোতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে।

    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়লে কি করা উচিত

    • বিড়ালের মুখে কোন সমস্যা কিনা দেখুন
    • বিড়ালের জিহ্বা বা দাঁতের সমস্যা আছে কিনা পরীক্ষা করুন
    • বিড়ালের সর্দি কাশি জ্বর হচ্ছে কিনা নজর রাখুন
    • যদি বিষক্রিয়া কিছু খেয়ে থাকে পশু চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান
    • বিড়ালের খাবার এবং পরিবেশ এর কোন বিষক্রিয়া আছে কিনা নজর রাখুন
    • অন্য কোন অসুস্থ বিড়ালের সঙ্গে মিশছে কিনা নজর রাখুন

    এই সমস্যাগুলো অবশ্যই ফলো করবেন এতে করে আপনার বিড়াল যদি আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে দ্রুতই সমাধান পাওয়া যাবে আর যদি সঠিকভাবে পরিদর্শন না করতে পারেন যদি আক্রান্ত বেশি হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত প্রশ্ন চিকিৎসঙ্গের সঙ্গে যোগাযোগ করুন।


    বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার চিকিৎসা

    বিড়ালের লালা পড়ার তেমন কোনো চিকিৎসা নেই তবে শুধুমাত্র সঠিক সময়ে ভ্যাকসিন দেওয়া হলেই এর থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের সমস্ত পশু হাসপাতাল রয়েছে সেগুলোতে মূলত Vet রা টিকা দেওয়া হয়। তিন মাস বয়সের পরেই যেকোনো বিড়ালকে এই টিকা দিতে পারবেন তবে লক্ষণগুলো দেখলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়ে এন্টিবায়োটিক খাওয়াতে পারেন। এরোগে অনেক বিড়াল মারা যায় আবার অনেক ক্ষেত্রে বিড়াল নিজে থেকেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে।


    এবং এটা থেকে কিন্তু অন্যান্য বিড়ালে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং গর্ভবতী থাকলে গর্ভের বাচ্চার সমস্যা দেখা দেয় তাই অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া উচিত এবং আক্রান্ত বিড়ালকে আলাদা রাখতে হবে তা না হলে অন্যান্য বিড়ালে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এবং বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পড়ার মাত্রা বাড়তে বাড়তে থাকবে।


    আরো পড়ুন: ফেসবুকে লেখালেখি করে টাকা ইনকাম করার উপায়


    মুখ দিয়ে লালা পড়া বিড়ালের যত্ন কিভাবে নিবেন

    শীতকালে এই রোগটা বেশি দেখা দেয়। এই সময় বিড়ালকে  ঠাণ্ডা পানিতে গোসল করানো থেকে বিরত রাখতে হবে। বিড়ালের মুখ দিয়ে লালা পরলে অনেক যত্ন নিতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণ থাকে বিশ্রামে রাখতে হবে। তাকে ঠান্ডা থেকে দূরে এবং গরম স্থানে রাখতে হবে। গরম কাপড় অথবা কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে উষ্ণ গরম খাবার এবং স্যালাইন, গ্লুকোজ ও পানি খাওয়াতে হবে এসময় বিড়াল খেতে চাইবে না কিন্তু অল্প অল্প করে খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হবে এতে করে বিড়াল দুর্বল হবে না। এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ গুলো খাওয়াতে থাকতে হবে।


    তবে আপনাদের খেয়াল রাখা উচিত যে বাড়িতে যদি অন্যান্য বিড়াল থাকে তাকে আলাদা ভাবে রাখতে হবে তা না হলে অন্যান্য বিড়ালের এই সংক্রমণ ছড়িয়ে যেতে পারে। বিড়ালের অসুস্থ লালার কারণে অথবা হাসির কারণেও কিন্তু ছড়িয়ে যেতে পারে তাই খালা খাবারের বাটি আলাদা রাখতে হবে এবং অন্যান্য বিড়াল যাতে ওর খাবারের পাতিলে না খাবার খায় সেই দিকে নজর রাখতে হবে। এবং বাটি গুলো ভালোমতো ডেটল স্যাভলন দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে।


    আরো পড়ুন: টিকটক থেকে টাকা ইনকাম পদ্ধতি। টিকটকে ভাইরাল হওয়ার উপায়


    আপনাদের জেনে রাখা উচিত বিড়ালের কারণে কিন্তু অনেক বিড়াল মারা যায় তাই আদরের বিড়ালটিকে নিয়মিত যত্ন নিতে হবে এবং এবং এই সমস্ত সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ভ্যাকসিন অথবা ওষুধগুলো খাওয়াতে হবে তা না হলে আপনার আদরের বিড়ালটি মারা যেতে পারে।


    বিড়ালের লালা কি ক্ষতিকর

    বিড়ালের লালা মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। বিড়ালের লালাতে ক্ষতিকর পরজীবী ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারে। এতে করে এলার্জির সমস্যা হতে পারে অথবা বিড়াল যদি রোগের কোন আক্রান্ত থাকে তাহলে মানুষের মধ্যেও চলে আসতে পারে। কোন ব্যক্তি যদি ক্যান্সার বা এইডসে আক্রান্ত রোগী হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু তুলনামূলকভাবে বিড়ালের লালা বেশি ক্ষতি করতে পারে।


    তাই বিড়ালের লালা থেকে দূরে থাকা উচিত এবং বিড়াল আদর করার পরে হাত ভালো মতো ধুয়ে নেওয়া উচিত। বিড়ালের লালা কোন ক্ষতস্থানে লাগলে অবশ্যই ক্ষতস্থান পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এতে করে আক্রান্ত স্থানে আর কোন সমস্যা হবে না।


    বিড়ালের অসুখ হলে কি করনীয়

    বিড়াল অসুস্থ হলে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি কেননা তারা অসুস্থ হলে কোন মানুষকে সরাসরি কিছু বলতে পারেনা। তাই আপনার বিড়ালের যদি নিচের দেওয়া কয়েকটি লক্ষণের সাথে মিলে যায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। চলুন বিড়ালের অসুখ হলে কি করে তা দেখে নেওয়া যাক।


    বিড়াল অসুস্থ হলে কিভাবে বুঝবেন

    বিড়াল অসুস্থ হলে মুখ দিয়ে লালা পরে, শ্বাসকষ্ট বা কাশি দেখা দেয়, চামড়ায় চুলকিয়ে লোম তুলে ফেলে, বমি বা ডায়রিয়া হতে পারে, খাবার পানি খেতে একেবারে সম্পূর্ণ অনীহা দেখায়, নাক চোখ কানের থেকে পানি আসে, শ্বাসকষ্টের সমস্যা হয়, ক্লান্তি এবং নিষ্ক্রিয় হয়ে থাকে এই লক্ষণ গুলো দেখলে বুঝতে পারবেন বিড়ালটি অসুস্থ হয়েছে।


    বিড়ালের অসুখ হলে কি করবেন

    • বিড়ালের লক্ষণ গুলো দেখে বুঝুন
    • অসুস্থ বিড়ালকে আলাদা রাখুন
    • পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার দিন
    • তাপমাত্রা বেশি অথবা কম যেন না হয় লক্ষ্য রাখুন
    • পশু চিকিৎসঙ্গের দ্রুত যোগাযোগ করুন
    • বাড়িতে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসাদিন
    • বিড়ালের ভ্যাকসিন নিশ্চিত করুন
    • পেশাদার অথবা পোষা প্রাণী চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
    • আগের তুলনায় বিড়ালকে অতিরিক্ত যত্ন করুন
    • প্রতিনিয়ত আপনার বিড়াল কি খাচ্ছে তা নজরে রাখুন

    এভাবে আপনার বিড়ালকে সুস্থ রাখতে পারবেন এক্ষেত্রে যদি অতিরিক্ত ভাবে আরও অসুস্থ হয়ে যায় তাহলে অবশ্যই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত অথবা পশু হাসপাতালে নিয়ে তার ট্রিটমেন্ট নেওয়া উচিত। এছাড়া পর্যায়ক্রমে অবশ্যই বিড়ালের প্রত্যেক মাসে টিকা অথবা ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

    একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

    Post a Comment (0)

    নবীনতর পূর্বতন