গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন যদি বেশি হয় তাহলে ওই সময় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় আবার অনেকেই ধরে নেই যে সিজার ছাড়া এটি কখনোই সম্ভব হবে না। আবার অনেকেই আছে যারা কিনা নরমাল ডেলিভারির জন্য বাচ্চার ওজন কত হবে তা জানতে চেয়ে থাকে। তাই বাচ্চার ওজন বেশি হলে নরমাল ডেলিভারি হওয়া সম্ভব কিনা এই নিয়ে অনেকেই দুশ্চিন্তায় ভোগেন তাই আজকে আমরা এই বিষয় নিয়ে আপনাদেরকে জানিয়ে দিব যে বাচ্চার ওজন কত হলে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভব।
নরমাল ডেলিভারির জন্য বাচ্চার ওজন ২.৫ কেজি থেকে ৪ কেজি কেজির মধ্যে হওয়া ভালো। তবে, শুধু বাচ্চার ওজনই নরমাল ডেলিভারির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় না, মায়ের শারীরিক অবস্থা, প্রসবের রাস্তার প্রশস্ততা, বিষয়গুলোর উপর কিন্তু নরমাল ডেলিভারি বিষয় থাকে।
ওজনের সীমা (কেজি) | নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা | বিশেষ মন্তব্য |
---|---|---|
২.৫ কেজির কম | কম | শিশু কম ওজনে জন্ম নিলে নরমাল ডেলিভারির ঝুঁকি বেশি থাকে। বিশেষ যত্ন প্রয়োজন। |
২.৫ - ৩.৫ কেজি | উচ্চ | এটি আদর্শ ওজন। নরমাল ডেলিভারি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। |
৩.৫ - ৪ কেজি | মাঝারি | বাচ্চার ওজন বেশি হলে কিছু ক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব। তবে জটিলতা থাকতে পারে। |
৪ কেজির বেশি | কম | বড় বাচ্চার কারণে সিজারিয়ানের সম্ভাবনা বেশি। |
নরমাল ডেলিভারির জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
মায়ের যদি কোন জটিলতা না থাকে, যেমন ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, বা অন্য কোনো গর্ভাবস্থার জটিলতা, তাহলে নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেশি থাকে। মায়ের প্রসবের রাস্তা যদি যথেষ্ট প্রশস্ত হয়, তাহলে 4 কেজি ওজনের বাচ্চারও নরমাল ডেলিভারি সম্ভব। গর্ভাবস্থায় বাচ্চার অবস্থান, গর্ভের পানি, বা অন্য কোন জটিলতা নরমাল ডেলিভারির উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
এসেছে সব মহিলাদের যে একই ধরনের ভূমিকা থাকে তা কিন্তু নয় তাই অবশ্যই বাচ্চার ওজন ছাড়াও মায়ের ও বাচ্চার সামগ্রিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করেই এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ডেলিভারি পদ্ধতি নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত আল্ট্রাস সাউন্ড এবং ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
নরমালে ডেলিভারি হওয়ার কিছু টিপস
- নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপ করা।
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া।
- নিয়মিত ব্যায়াম করা।
- পর্যাপ্ত ঘুমোনো।
- মানসিক চাপ কমাতে চেষ্টা করা।
- প্রয়োজন মত পানি পান করা
- ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা
- পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বেশি হলে করণীয়
গর্ভ অবস্থায় বাচ্চার ওজন যদি বেশি হয় তাহলে নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে কিন্তু সমস্যা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে সিজারের বিবেচনার মাধ্যমে বাচ্চা ডেলিভারির চেষ্টা করা হয়। বাচ্চার ওজন যদি চার কেজি বেশি হয়ে থাকে তাহলে প্রথম অবস্থায় রোগীর পরিস্থিতি এবং বাচ্চা বের হওয়ার রাস্তা যদি স্বাভাবিক থাকে এবং বাচ্চার ওজন অনুযায়ী যদি পরিস্থিতি ঠিক থাকে তাহলে নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা করে থাকে।
নরমাল ডেলিভারি হওয়ার লক্ষণ সমূহ
তবে ৪ কেজির বেশি যদি বাচ্চার ওজন হয়ে থাকে তাহলে সিজার ছাড়াও বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করে বাচ্চা ডেলিভারি চেষ্টা করা হয়। এক্ষেত্রে বাচ্চা রাস্তা ক্লিয়ার করার জন্য ছোট কোন অপারেশনের মাধ্যমে তা সম্পন্ন করা হয়ে থাকে। এটি বিশেষ প্রয়োজনে পরবর্তীতে করে থাকে প্রথম অবস্থায় কখনোই রাস্তার বাড়তি অংশ কাটা হয় না।
নরমাল ডেলিভারির জন্য কোন হাসপাতাল ভালো দেখে নিন
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরবর্তী দিনগুলো গ্রহণ করতে হবে তাহলে বাচ্চা হওয়ার সময় নিজেই গাইনী বিশেষজ্ঞ মাধ্যমে যোগাযোগ করেছেন সে গাইনী বিশেষজ্ঞ মতামত এই ডেলিভারির জন্য প্রিপারেশন নিবেন তাহলেই আশা করা যায় কোন ধরনের সমস্যা হবে না।
গর্ভাবস্থায় বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত
গর্ভ অবস্থায় সাধারণত একটি বাচ্চার ওজন ২.৯ থেকে ৪.২ কেজি এবং মেয়ে শিশুর ওজন ২.৭ থেকে ৪.২ হওয়া উচিত এবং বাচ্চার ওজন যদি এমন অবস্থায় থাকে তাহলে নরমাল ডেলিভারির জন্য সহজ হয়।
৪০ সপ্তাহ পর্যন্ত একজন নারীর গর্ভকাল ধরা হয়ে থাকে। এর মধ্যে 30 সপ্তাহ পর্যন্ত গর্ভের শিশুর ওজন ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। এবং পরবর্তী ১০ সপ্তাহ পর্যন্ত আড়াইগুণ হারে বৃদ্ধি পেতে থাকে এক্ষেত্রে ৩,৪৬২ গ্রাম হয়। তবে মনে রাখবেন যে এটি আদর্শ ওজন তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ওজন কম বেশি হতে পারে।
সিজার করার খরচ এবং নরমাল ডেলিভারি খরচ কত জেনে নিন
বাচ্চার ওজন কত হলে স্বাভাবিক
বাচ্চার ওজন ২.৫ কেজি থেকে ৩.৫ কেজি পর্যন্ত আদর্শ ওজন। ৪ কেজি বা তার বেশি হলে নরমাল ডেলিভারির জন্য জটিলতার ঝুঁকি থাকতে পারে। তবে এক্ষেত্রে যদি ২.৫ কেজির কম শিশুর ওজন হয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও কিন্তু সংক্রমণ বা অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে।
তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই ২.৫ কেজি থেকে শুরু করে ৩.৫ কেজের মধ্যেই শিশুর স্বাভাবিক ওজন হিসাবে ধরা হয়। তবে এক্ষেত্রে গর্ভ অবস্থায় যদি ডাইবেটিকস বা উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যা থাকে তাহলে এর মেয়াদকাল বা সময়সীমা সম্পর্কে অবশ্যই ডাক্তারের মাধ্যমে অবগত হয়ে নেওয়া উচিত।
বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায়
সিজার করার জন্য বাচ্চার ওজনের উপর নির্ভর করে না এক্ষেত্রে মায়ের শারীরিক অবস্থা এবং বাচ্চার অবস্থান এবং প্রসব বেদনার উপর নির্ভর করে। তবে কিছু কিছু সময় বাচ্চার ওজন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে যদি বাচ্চার ওজন ৪ কেজির বেশি হয়ে থাকে। অথবা দুই কেজির কম ওজন হয়ে থাকে তাহলে কিন্তু বাচ্চার প্রসবকালীন ঝুঁকি থাকতে পারে।
তাই এই ক্ষেত্রগুলোতে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ অনুযায়ী সিজার করা উচিত কেননা চার কেজির বেশি ওজন হলে বাচ্চার ডেলিভারির সময় প্রবলেম দেখা দেয় অথবা দুই কেজির নিচে হলে সে ক্ষেত্রেও কিন্তু বাচ্চার ঝুঁকি থাকে তাই সিজারের প্রয়োজন পড়তে পারে।
বয়স অনুযায়ী মেয়ে বাচ্চার ওজন কত হওয়া উচিত
বয়স | গড় ওজন (কেজি) |
---|---|
জন্মের সময় | ২.৫ - ৪ কেজি |
১ মাস | ৩.৫ - ৫ কেজি |
৩ মাস | ৪.৫ - ৬.৫ কেজি |
৬ মাস | ৬ - ৮ কেজি |
৯ মাস | ৭ - ৯ কেজি |
১ বছর | ৮ - ১০ কেজি |
২ বছর | ১০ - ১২.৫ কেজি |
৩ বছর | ১২ - ১৪ কেজি |
৪ বছর | ১৩ - ১৬ কেজি |
৫ বছর | ১৪ - ১৮ কেজি |
৬ বছর | ১৬ - ২০ কেজি |
৭ বছর | ১৮ - ২২ কেজি |
৮ বছর | ২০ - ২৫ কেজি |
৯ বছর | ২২ - ২৮ কেজি |
১০ বছর | ২৫ - ৩১ কেজি |
১১ বছর | ২৮ - ৩৫ কেজি |
১২ বছর | ৩০ - ৪০ কেজি |
১৩ বছর | ৩৫ - ৪৫ কেজি |
১৪ বছর | ৪০ - ৫০ কেজি |
১৫ বছর | ৪৫ - ৫৫ কেজি |
এক্ষেত্রে আপনার মেয়ে বাচ্চার বয়স অনুযায়ী ওজন কত হওয়া উচিত এবং যদি এই ওজন না হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কিভাবে স্বাস্থ্যগত উন্নতি করা যায় সে বিষয়ে নজর রাখুন।
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন