অবৈধভাবে আমেরিকা যাওয়ার উপায় ও কেমন খরচ হতে পারে

আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় হল অবৈধভাবে আমেরিকাতে যাওয়ার উপায় এবং এই অবৈধভাবে গেলে আপনি কতটা ঝুঁকিতে থাকবেন এবং কি কি ক্ষতি হতে পারে এবং যাওয়ার উপায় টা কতটা ব্যয়বহুল তা সম্পূর্ণ এই কনটেন্ট এর মাধ্যমে আলোচনা করা হয়েছে আশা করছি ওরা কনটেন্ট পড়লেই আপনারা বুঝে যাবেন যাওয়া কতটা ঝুঁকিপূর্ণ এবং কত টাকা খরচ হতে পারে।

বাংলাদেশ থেকে আমেরিকা তে সরাসরি অবৈধ ভাবে যাওয়া সম্ভব নয় তবে আপনাকে যেতে হলে মোটামুটি 15 থেকে 20 লক্ষ টাকা খরচ করা লাগবে দালালের মাধ্যমে আপনাকে অবৈধভাবে আমেরিকাতে যেতে হবে সেক্ষেত্রে আপনাকে কয়েকটি দেশের মাধ্যমে যেতে হতে পারে সেগুলোতেও আপনাকে অবৈধভাবে এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাতায়াত করা লাগবে এর মাঝখানে হয়তো আপনাকে পুলিশেও আটক করতে পারে তবে আপনার যে দালাল চক্র রয়েছে তারাই আপনাকে আবার ছাড়িয়ে নিবে এবং তার পরবর্তী পতা আবার দেখিয়ে দিবে। তাহলে চলুন পর্যায় ক্রমে দেখে নেওয়া যাক কোন পথে আপনি আমেরিকাতে প্রবেশ করবেন।

অবৈধভাবে কি আমেরিকাতে যাওয়া যায়

অবৈধ উপায়ে আমেরিকা যেতে হলে আপনার মধ্যে তিনটি বিশেষ গুণ অবশ্যই থাকতে হবে এ তিনটি গুণের একটি হল শারীরিক সক্ষমতা দ্বিতীয়টি হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত ধৈর্য এবং 3 নাম্বারটি হচ্ছে ফিনান্সিয়াল সাপোট কোন একটির ঘাটতি থাকলে আপনার অবৈধ উপায়ে আমেরিকা যাওয়ার আর হবে না বাংলাদেশ থেকে আমেরিকায় অবৈধ পথে যাওয়ার রাস্তাটি খুবই ব্যয়বহুল দীর্ঘ বিপদসংকুল এবং যথেষ্ট ঝুঁকিপূর্ণ।

এই দীর্ঘ রাস্তাটির কিছু অংশ বিমানে কিছু অংশ পায়ে হেঁটে কিছু অংশ নৌকায় আবার কিছু অংশ নদী খাল বা ডোবায় সাঁতরিয়ে আপনাকে পার হতে হবে। দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকার কষ্ট তো আপনাকে সহ্য করতেই হবে এবার আসা যাক আসল কথায়।

অবৈধ পথে যেতে হলে দালালের মাধ্যমে

আমেরিকায় যেতে হলে প্রথমেই আপনাকে প্রশিক্ষিত এবং অভিজ্ঞতা সম্পন্ন দালালের শরণাপন্ন হতে হবে এতে আপনার প্রায় 15 থেকে 30 লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচ হওয়ার সম্ভাবনা আছে এই প্রশিক্ষিত দালালরা বাকিতে কোন কাজ করবে না আপনার জন্য তাদেরকে কমপক্ষে ফিফটি পার্সেন্ট অগ্রিম দিতে হবে বাকিটা আমেরিকায় পৌছানোর পর দিলেই চলবে।

বাংলাদেশ থেকে ইতালি যাওয়ার উপায় | ইতালিতে বেতন কত?

অবৈধভাবে আমেরিকা যাওয়ার উপায় 

এই দালাল ভাই আপনাকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে আমেরিকা যাওয়ার রাস্তায় নামিয়ে দিবে এরপর শুরু হল আপনার আমেরিকায় যাত্রা। প্রথমেই আপনাকে বিমানে যেতে হবে দুবাই দুবাই থেকে বিমানে  ব্রাজিল থেকে বিমানে যেতে হবে বলে বলিভিয়া।

বলিভিয়া যাওয়ার পর আপনার জার্নি টু আমেরিকা যাওয়ার আরাম-আয়েশ আপাতত এখানেই শেষ এরপর শুরু হবে আপনার আসল যুদ্ধ কারণ হলো এরপর ল্যাটিন আমেরিকার সমুদ্র তীরবর্তী অনেকগুলো দেশ আপনাকে পাড়ি দিতে হবে যাই হোক বলিভিয়া থেকে স্থলপথে এবং জলপথে আপনাকে যেতে হবে পেরু। পেরু থেকে যেতে হবে কলম্বিয়া কলম্বিয়া থেকে যেতে হবে পানামা পানামার জার্নিটা খুবই ভয়ঙ্কর জটিল এবং খুবই রিস্কি যাওয়ার পথে সেখানে নদী-খাল-বিল জঙ্গল পাড়ি দিতে হবে আপনাকে।

পানামার রাস্তাটি পায়ে হেঁটে কিছুটা নৌকায় কিছুটা সাঁতরে পার হতে হবে আপনাকে যেটা খুবই জটিল এবং সবাই এই কাজটি মোটামুটি পারেনা তাই অবশ্যই আপনাকে শারীরিকভাবে সক্ষম হতে হবে।পানামার খুবই কর্দমাক্ত স্যাঁতস্যাঁতে এবং উঁচু-নিচু পাহাড় ও জঙ্গল আপনাকে পাড়ি দিতে হবে এখানে প্রতি পদে পদে বিপদের সম্ভাবনা থাকে সারাদিন টিপটিপ করে বৃষ্টি পড়া সাপ বিচ্ছু পোকা মাকড়ের যন্ত্রণার সাথে সাথে রয়েছে সেখানকার স্থানীয় বনদস্যুদের হামলা এসব বনদস্যুদের কবলে পড়লে পরনের প্যান্টটা ছাড়া বাকি সবকিছুই এরা লুটে নিয়ে যায়।

পানামার এই ভয়ঙ্কর রাস্তা পার হওয়ার সময় অনেক অভিবাসী সেখানে অসহায় ভাবে মৃত্যুবরণ করে থাকে। যাইহোক পানামা পার হতে পারলে আপনার পরবর্তী গন্তব্য হবে পাশের দেশ কোস্টারিকা কোস্টারিকা থেকে যেতে হবে নিকারাগুয়া নিকারাগুয়া থেকে যেতে হবে হন্ডুরাস। হন্ডুরাস থেকে যেতে হবে এল সালভাদর এল সালভেদর থেকে আপনাকে যেতে হবে গুয়েটমালা।

গুয়েতমালা থেকে যেতে হবে মেক্সিকো অধীন এরপর মেক্সিকো আমেরিকা বর্ডারে যেতে হবে আপনাকে সেখানে গিয়ে সময় সুযোগ ও দালালের গ্রিন সিগন্যাল এর অপেক্ষায় থাকতে হবে আপনাকে এরপর সুযোগ বুঝে ঢুকে পড়তে হবে আমেরিকার সীমান্তে।

কানাডা জব ভিসা 2022  | কানাডা ওয়ার্ক পারমিট ভিসা

অবৈধভাবে আমেরিকাতে প্রবেশের পর

আমেরিকায় প্রবেশের পর আমেরিকান পুলিশ আপনাকে গ্রেফতার করে সোজা হাজতে ঢুকিয়ে দেবে এবং আমেরিকায় অবৈধ প্রবেশ অপরাধে আপনার বিরুদ্ধে তারা ইমিগ্রেশন আইনে মামলা করবে।এরপর আপনার নিয়োগকৃত দালাল যার সাথে আপনি কন্টাক করেছেন সেই দালাল তাদের আইনজীবীদের সাথে কন্টাক করে আপনাকে ছাড়ানোর ব্যবস্থা করবে এরপর তারা যদি আপনাকে ছাড়াতে পারে সেখানে আপনাকে মোটা অঙ্কের একটি জরিমানা ধার্য করবে এবং সেই জরিমানা পরিশোধ করার পর আমেরিকান পুলিশ আপনাকে ছেড়ে দেবে ছেড়ে দেওয়ার পর আপনি সেখানে টেম্পোরারি ভাবে বসবাস করতে পারবেন।

অবৈধ পথে আমেরিকা যাওয়া কতটা ঝুঁকি

অবৈধপথে যাওয়া টা অনেকটাই ঝুঁকি সেটা যে কোন দেশেই হোক না কেন। আবার সেটা যদি হয় আমেরিকা তাহলে ধরে নিতে হবে এটা অনেকটাই ঝুঁকির সম্মুখীন হতে হবে কারণ আমেরিকাতে যাওয়াটা বিভিন্ন দেশের মাধ্যমে হয়ে থাকে তাই সে সমস্ত দেশ গুলো নিয়ে যেতে হলে আপনাকে নদী-নালা খাল-বিলসহ বিভিন্ন অলিগলি পাড়ি দিতে হবে এ সমস্ত অলিগলিতে আপনি হয়তো বা পুলিশের ধরা খেতে পারেন অথবা। সেদেশের ডাকাতের হাতে পরতে পারেন এ সময় আপনার জীবনে চলে যেতে পারে আবার পুলিশের হাতে আটকা পড়ে আপনাকে জেল জরিমানা হতে পারে আবার এমন সময় হতে পারে যে আপনাকে দেশেও পাঠিয়ে দিতে পারে।

কারণ দালালরা যখন আপনার কাজ বাদ দিবে তখন কিন্তু আপনাকে সেদেশের জেলে বন্দী থাকা লাগতে পারে। কারণ দালালদের একেবারেই বিশ্বাস করা সম্ভব নয় এমন অনেক ঘটনাই ঘটেছে অবৈধভাবে ইতালি অন্যান্য দেশে যাওয়ার পথে দালালদের আর খোঁজ পাওয়া যায় না আপনাদেরকে নির্দিষ্ট গন্তব্যে পাঠিয়ে সেখানে আটকে রেখে দেয় কিন্তু আপনার কাছে যে অগ্রিম টাকাটা নিয়েছে সেটাই তাদের লাভ এই হিসাবে আপনাকে আর পরবর্তী স্টেপ দেখা দেয় না।

বিশেষ করে আমেরিকাতে যাওয়ার পথে আপনাকে পানামা আমার ভেতর দিয়ে যেতে হয় তখন পানামার নদী-নালা-খাল-বিল পার হতে গিয়ে আপনার বিভিন্ন রকম সমস্যা হতে পারে এমনকি জীবজন্তুর হাতেও আপনি মারা যেতে পারেন। তাছাড়াও পানামার বনদস্যু সহ অন্যান্য ডাকাত সর্দার আপনার ক্ষতি করতে পারে। পানামার পথ পার হতে পারলেই অনেকটাই সংকট কেটে যায় তারপর আপনি আমেরিকার প্রবেশ করতে পারবেন তবে সম্পূর্ণ প্রচেষ্টায় একটি ঝুঁকি।

ইউরোপের কোন দেশে যেতে কত টাকা লাগে 2022 | অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার খরচ

অবৈধ পথে যেতে হলে কত টাকা খরচ হবে

আমেরিকাতে অবৈধ পথে যেতে হলে দালালের দ্বারস্থ হওয়া লাগে সে ক্ষেত্রে আপনার 15 লাখ থেকে 30 লাখ টাকা পর্যন্ত খরচ হবে। এই খরচগুলো বিভিন্ন দেশে যাতায়াতের খরচ এবং দালালদের বিভিন্ন চক্রকে দেওয়ার জন্য তারা এই খরচগুলো করে থাকে। এ খরচের মধ্যে আপনি দুবাই বিমান ভাড়া সহ ব্রাজিলের বিমান ভাড়া বা অন্যান্য ভিসা কার্যক্রমের জন্য আপনাকে এই খরচগুলো অবশ্যই দেওয়া লাগবে। দালালরা অগ্রিম 50% পেমেন্ট অগ্রিম নিবে পরবর্তীতে আমেরিকায় পৌছানোর পরে বাকি টাকা আপনার কাছ থেকে নেবে।

অবৈধ পথে গেলে আমেরিকাতে বৈধ হওয়া যাবে

যখন আপনাকে অবৈধভাবে আমেরিকাতে ঢুকিয়ে দিবে তখন আপনি টেম্পোরারি বসবাস করতে পারবেন। আজ সেখানে পার্মানেন্ট হওয়ার জন্য বা গ্রিন কার্ড পাওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে বিভিন্ন দালালের দ্বারস্থ হওয়া লাগবে এবং তারা আপনাকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করবে সে টাকা দিয়ে আপনি খুব সহজেই আমেরিকার নাগরিকত্ব বা গ্রীন কার্ড পেয়ে যাবেন সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে একটি জব হোল্ডার হতে হবে। যদি আপনি জবাব হোল্ডার হয়ে যেতে পারেন তাহলে খুব সহজেই আমেরিকার নাগরিকত্ব পেতে পারেন।

বিদেশ যাওয়ার জন্য কোন ব্যাংক লোন দেয় দেখে নিন

আমেরিকাতে বৈধ হতে হলে কি করতে হবে

আমেরিকাতে বৈধ হতে হলে আপনাকে সর্ব প্রথম বিভিন্ন দালালের দ্বারপ্রান্ত হওয়া লাগবে দালালরাই আপনার মাধ্যম দেখিয়ে দিবে কিভাবে আপনি আমেরিকাতে বৈধ হতে পারবেন সেই প্রসেস তারা বলে দিবে। এবং কত টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে এবং আপনার কি কি ডকুমেন্টস এর প্রয়োজন হবে তার সবকিছুই তারা রেডি করে দিবে শুধুমাত্র দরকার আপনার পর্যাপ্ত টাকা। তাদেরকে যদি পর্যাপ্ত টাকা দিতে পারেন তাহলে সবই মিলবে আমেরিকার বৈধতা সহ আমেরিকা দেশ জব এর ডকুমেন্ট সবকিছুই আপনাকে রেডি করে দিবে।

সাবধানতা

আপনি যদি মনে করেন যে আমেরিকাতে যাবেন অবৈধপথে তাহলে এটি আপনাকে অনেকবার চিন্তা ভাবনা করেই এমন মনস্থির করতে হবে। কারণ এটা আপনার লাইফের জন্য রয়েছে কেননা বিভিন্ন পথ পাড়ি দিতে গিয়ে আপনাকে নানা রকমের সমস্যার মধ্যে পড়তে হতে পারে অথবা নদীপথে সমুদ্রপথে আপনি মারা যেতে পারেন এমনকি বনের পশু এবং ডাকাত দলের সামনে পড়লে আপনার জীবন চলে যেতে পারে। সেই সাথে আপনার কায়িক পরিশ্রম তো আছেই এবং টাকা-পয়সার একটি বড় বিষয় এখানে আছে তাই এরকম রিস্ক না নিয়ে বৈধ উপায়ে কিভাবে আমেরিকাতে প্রবেশ করবেন সেই চিন্তা ভাবনা করেন। কারণ মানুষের জীবন একটাই সেটা ভুলের মধ্য দিয়ে না নিয়ে গিয়ে সঠিক উপায় চলাই সবথেকে উত্তম। তাই সর্বদা চেষ্টা করবেন সঠিক পথে এবং বৈধ পথে বিদেশ যাওয়ার সে ক্ষেত্রে সবদিক দিয়েই আপনি নিরাপত্তা পাবেন।

বিদেশ যাওয়ার আগে যেগুলো জানা জরুরী